Friday 3 October 2014

চমকে দেয়া ৭ সিনেমা

কিছু লোক আছে, যারা আগেই সিনেমার কাহিনী বলে দিয়ে মূল মজাটা নষ্ট করতে পছন্দ করে। ‌‌‌'‌তোমারে যে মুভিটা দিসি….জটিল! দেইখো। ফাটাফাটি। শেষ গিয়া শিওর ধাক্কা খাইবা। আমি তো দেখার সময় বুঝিই নাই অমুক আসলে ভিলেন। আর লাস্টে যখন নায়কটা মইরা গেল, তখন তো আমি পুরাই স্টিল হইয়া গেসিলাম, বুঝছো? দেইখো সিনেমাটা। লাস্টে ধাক্কা খাইবা, শিওর।’ - এ জাতীয় মানুষের কাছ থেকে সিনেমা নেওয়া বেশ বিপজ্জনক।
আবার এমন সমালোচক দর্শকও আছে, যারা সকল সিনেমা দেখেই বলে ‘ও এই কাহিনী! এইটা তো শুরুতেই বুঝছিলাম।’ এরাও কম বিপজ্জনক নয়। আমিও বোধহয় মাঝে মাঝে এই দলের সদস্য হয়ে যাই। আসলেই কিছু কিছু সিনেমার কাহিনী ধরে ফেলা যায়। তবে কিছু সিনেমা আছে, যেগুলোর কাহিনী আমি শুরুতে ধরতে তো পারিই নাই, উল্টা ‘ধাক্কা’ খাইসি। মনে দেখে মনে হইসে, ‘আরে, এইটা কী হইলো?’ মাঝে মাঝেই সেই চমকে দেয়া সিনেমাগুলো দেখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু দেখি না। প্রথমবার দেখার চমকটা নষ্ট না করাই ভালো। তেমন নয়টা ছবির কথা লিখলাম। ভয় নাই, কাহিনী বলবো না।


দ্য রেড বেলুন
রেটিং ৮.২
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: অ্যালবার্ট ল্যামোরিজ

প্যারিসের এক ছোট্ট ছেলে আর একটা লাল বেলুন নিয়েই সিনেমার গল্প সাজিয়েছেন ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা অ্যালবার্ট ল্যামোরিজ। সিনেমাটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৩৪ মিনিট। ফ্যান্টাসি নির্ভর এই সিনেমায় কোন সংলাপ নেই বললেই চলে। তারপরও আমাকে একেবারে চুম্বকের মত আকর্ষণ করে রেখেছিল সিনেমাটা। শেষ হওয়ার পরও কয়েক মুহুর্ত আক্ষরিক অর্থেই ‘স্টিল’ হয়ে ছিলাম বিস্ময়ে।
১৯৫৬ সালের এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অ্যালবার্ট ল্যামোরিজের ছেলে প্যাসকেল ল্যামোরিজ। অভিনয় করেছেন ল্যামোরিজের মেয়েও।




ফোনবুথ
রেটিং ৭.১
চিত্রনাট্য: ল্যারি কোহেন, পরিচালনা: জোয়েল শুমাখার

সব সময় নায়ক নায়িকা নির্ভর সিনেমা দেখেছি। অন্যধাঁচের সিনেমা তখনও দেখা হয় নাই। এইচএসসি’র পর ফোনবুথ দেখে প্রথম মনে হয়েছিল ‘সিনেমা এমনও হতে পারে?’ ফোনবুথ নিয়ে যে এমন একটা সিনেমা হতে পারে তা ভেবে মাঝে মাঝে আমি অবাকই হই। পুরো সিনেমা জুড়েই স্টু নামের এক ব্যক্তি ফোনবুথে কথা বলে অচেনা এক ব্যক্তির সঙ্গে, যে তার সম্পর্কে সব জানে। অচেনা ব্যক্তির ফোন, ফোনবুথ, স্নাইপার সব মিলিয়ে পরিচালক জোয়েল শুমাখার দারুন টেনশন আর উত্তেজনা ফুটিয়ে তুলেছেন ২০০২ সালে নির্মিত এই সিনেমাটিতে।


দ্য প্রেস্টিজ
রেটিং ৮.৫
চিত্রনাট্য: জোনাথন নোলান ও ক্রিস্টোফার নোলান
পরিচালনা: ক্রিস্টোফার নোলান



জাফরউল্লাহ শরাফতের ভাষায় বলতে হয়, ‘রুদ্ধশ্বাস, শ্বাসরুদ্ধকর, টানটান উত্তেজনাপূর্ণ এক সিনেমা ওই প্রেস্টিজ। ব্যাটম্যানখ্যাত হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলান, তিনি বুঝিয়ে দিলেন ড্রামা ফিল্ম কাকে বলে।’ আসলেই। দুই জাদুকরের উত্থান-পতন আর পরষ্পরবিরোধী লড়াই নিয়ে এরকম উত্তেজনাপূর্ণ সিনেমা আমি আর দেখি নাই। হিউ জ্যাকম্যান আর ক্রিস্টিয়ান বেলের অভিনয়ও ছিল দূর্দান্ত।

  
দ্য ইলিউশনিস্ট

রেটিং ৭.৬
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: নিল বার্গার


একজন জাদুকরের ভালোবাসার গল্প দ্য ইলিউশনিস্ট। নিল বার্গার নির্মিত সিনেমটা এক কথায় দূর্দান্ত। শেষের দিকে যখন ‘ও, আচ্ছা, ভালোই’ টাইপ অনুভূতি হচ্ছিল, তখনই কাহিনী এমন মোচড় দিল যে নড়েচড়ে বসলাম। আর শেষে তো দারুন চমক অপেক্ষায় ছিলোই। ছবিটা এত ভালো লেগেছিলো যে, বিকালে দেখার পর রাতে আবার দেখসি।মুভি; রিভিউ




দ্য বয় ইন দ্য স্ট্রিপড পাজামাস


রেটিং ৭.৮
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: মার্ক হারম্যান


ছবির পোস্টারের লেখা স্লোগানটা খুব সুন্দর- Lines may dived us, but hope will unite us.’ ২য় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত এই সিনেমাটা দেখে ‘এইটা কী হইলো?’ টাইপ অনুভূতি হয়েছিল। জার্মান এক সেনা কর্মকর্তার ছেলের সঙ্গে ক্যাম্পে বন্দী এক ইহুদী ছেলের অদ্ভুত বন্ধুত্বের গল্প ‘দ্য বয় ইন দ্য স্ট্রিপড পাজামাস’।



লাইফ অব পাই

রেটিং: ৮
চিত্রনাট্য: ডেভিড ম্যাগি, পরিচালনা: অ্যাং লি


লাইফ অব পাই চমকে দিয়েছে গল্প আর মেকিংয়ের মাধ্যমে। পুরো সিনেমাই চমকে পরিপূর্ণ।পরে যখন ‘মেকিং অব লাইফ অব পাই’ দেখলাম, তখন আরো বেশি অবাক হয়েছি। কল্পনাকেও ছাড়িয়ে গেছে এই সিনেমাটা। এমন গল্পের আইডিয়া কখনোই আমার মাথায় আসতো না। পরিচালক অ্যাং লি-ও দারুণভাবেই গল্পটাকে সেলুলয়েডে ফুটিয়ে তুলেছেন।  


এ বিউটিফুল মাইন্ড

রেটিং: ৮.২
চিত্রনাট্য: আকিভা গোল্ডসম্যান, পরিচালনা: রন হাওয়ার্ড

যে সিনেমাগুলোর খুব নাম শুনি চারপাশে, সেগুলো কেন যেন দেখা হয় না। দেখার পর অনেক সময় হতাশও হতে হয়। ‘এ বিউটিফুল মাইন্ড’ সে রকমই বহুল আলোচিত সিনেমা। স্কুল-কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও শুনেছি রাসেল ক্রো’র এই সিনেমার কথা। ‘এই সিনেমা দেখস নাই? আই হাই…! দেখিস। রাসেল ক্রো…বস পাবলিক!’
দেখার পর বুঝলাম, মানুষ ভুল বলেনি। আসলেই অসাধারণ এক সিনেমটা তৈরি করেছেন পরিচালক রন হাওয়ার্ড। তরুণ প্রডিজি জন ন্যাশ আর তার কল্পনার গল্প ‘এ বিউটিফুল মাইন্ড’।  






1 comment:

  1. ফোনবুথ দেখা হয় নাই!

    প্রেস্টিজ আর ইল্যুশনিস্ট ভালো! দ্য বয় ইন স্ট্রাইপ পাজামা দুর্দান্ত!

    লাইফ অফ পাই ওতোটা টানে নাই!

    ReplyDelete